সর্বশেষ আইসিসি বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার ভারতের সূর্যকুমার যাদব এবার দেখছেন মুদ্রার উল্টো পিঠ। উড়তে থাকা ভারতীয় এই ব্যাটার হঠাৎ মাটিতে আছড়ে পড়লেন। ক্যারিয়ারে এই প্রথম সমালোচনার তীরে দিদ্ধ হচ্ছেন; আর কেনই বা হবে না!
মূলত টি-টোয়েন্টির এই ম্যাচ উইনারকে ভারত অন্য সংস্করণে কাজে লাগাতে গেলেই বাধে বিপত্তিটা। তার শেষ ৬ ইনিংসে মোট রান ২৪ (৮, ০, ০, ০, ১৫, ১)।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে টানা তিন ম্যাচে প্রথম বলে আউট হয়ে লজ্জার ইতিহাস গড়েন এই ব্যাটার।
ওয়ানডেতে সূর্যকুমারের এমন পারফরম্যান্স এর পরও তিনিই ভারতকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারেন এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করে ক্রিকেট পাড়ায় আলোচনা তুঙ্গে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি রিকি পন্টিং। এছাড়া এই মিডল অর্ডার ব্যাটারকে টিম ইন্ডিয়ার বিশ্বকাপ দলে রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন রিকি পন্টিং।
আইসিসি রিভিউয়ে গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক পন্টিং বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় ভারতের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন হবেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
বিশ্বের সবাই জানেন সাদা বলের ক্রিকেটে সূর্যকুমার কী করতে পারে। আমার মনে হয়, ভারতের উচিৎ হবে তাকে সুযোগ দেওয়া। কারণ, সে ওই ধরনের ক্রিকেটার যে কিনা বিশ্বকাপ জেতাতে পারে।
সে ওলহন কিছুটা অধারাবাহিক তবে সে এমন মানের ক্রিকেটার যে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে দলকে জেতানোর সামর্থ্য রাখে।
কে এই সূর্যকুমার যাদব:
৩২ বছর বয়সী সূর্যকুমার অশোক যাদব ভারতীয় ডানহাতি আক্রমণাত্মক ব্যাটার। এছাড়া তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বাই ক্রিকেট দলের হয়ে খেলে থাকেন।
২০২২ সালের পারফরম্যান্সে বিচারে আইসিসি বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হয়েছেন তিনি। গত বছর ৩১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৪৬.৫৬ গড়ে ১ হাজার ১৬৪ রান করেন সূর্যকুমার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো ব্যাটারের এক বছরে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এ ছাড়াও উদ্বাবনী অনেক শট খেলে বিশেষভাবে নজর কাড়েন তিনি। তার স্ট্রাইক ১৮৭.৪৩।
এ ফরম্যাটে হাকিয়েছেন ৬৮টি ছক্কা। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ ছয়ের কীর্তিও এটি। পুরো বছর ২টি সেঞ্চুরি ও ৫টি ফিফটি করেন।
এছাড়াও ওই বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩টি অর্ধশতকসহ দারুণ ছন্দে ছিলেন।
তবে এক দিনের ক্রিকেটে তিনি ছন্দহীন এই ক্রিকেটার। এ পর্যন্ত ২১টি ওয়ানডে খেলেছেন, যেখানে ১০২.১২ স্ট্রাইক রেট ও ২৪.০৫ গড়ে করেছেন আর ৪৩৩ রান। তার নামের পাশে ফিফটি দুটি, নেই সেঞ্চুরি।
পন্টিংয়ের ভরসার কারণ:
টি-টোয়েন্টির ক্লাসে ফাস্ট বয় সূর্য, ওয়ানডেতে বেশ বেমানান। তবু তাতে আস্থা পন্টিংয়ের। কারণ তিনি মনে করেন, অনেক কিংবদন্তির নামের পাশে এমন বেমানান কিছু অধ্যায় রয়েছে। কারণ টানা তিন ম্যাচে গোল্ডেন ডাক কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন নয়।
একাধিক সিরিজ ও টুর্নামেন্ট মিলে আরও পাঁচ ভারতীয় ক্রিকেটারের এমন অপ্রত্যাশিত রেকর্ড আছে। যাদের মাঝে একজন—শচীন টেন্ডুলকার।
এছাড়াও সূর্যকুমারের সক্ষমতাকে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত গ্রেট অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের সঙ্গেও তুলনা করেছেন রিকি পন্টিং।
আরও পড়ুন: মেসিকে দলে ফেরাতে মরিয়া বার্সেলোনার নতুন পরিকল্পনা
ক্রিফোস্পোর্টস/০৯এপ্রিল২৩/এসএ