টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে টানা দুই ম্যাচ হারে এবারের আসর থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে টিম বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর ভারতের সঙ্গে দ্বিতীয় ম্যাচেও হার সঙ্গী হয় শান্ত-সাকিবদের। ভারতের কাছে ৫০ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।
শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায় মাঠে নামে দুদল।
সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ের টিকে থাকতে ভারতকে হারানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে—এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ।
শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রানে থামে ভারত। জবাবে ভারতের বিশাল লক্ষ্যের সামনে ১৪৬ রানে থামে বাংলাদেশের রানের চাকা। ২০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ৫০ রানের আক্ষেপে পুড়েছে সাকিব-শান্তরা।
এই হারে সুপার এইট থেকে বাংলাদেশের বিদায় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে। যা আছে তা, গাণিতিক মারপ্যাঁচ। সেখানেও পয়েন্টে তলানিতে সাকিবরা। গাণিতিক হিসাবে—শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানের জয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার হার। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার জয়। এরপর ৩ দলের নেট রানরেটের হিসাব। এমন দ্বৈব কিছু না হলে শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কেবল আনুষ্ঠানিকতা বাকি।
আগামী ২৫ জুন সকাল সাড়ে ছয়টায় মাঠে নামবে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন :
» একই বলে দুবার আউট হয়েও ‘নট আউট’! ভিডিও ভাইরাল
এদিকে সুপার এইটের ১ নম্বর গ্রুপে টানা দুই ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠেছে ভারত। ১ জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে ভারতের পরে অস্ট্রেলিয়া। এই গ্রুপ থেকে ভারতের সেমিফাইনাল এক প্রকার নিশ্চিত। বাকি একটি দল—অস্ট্রেলিয়া না কি আফগানিস্তান। সেটি এখন সময়ের অপেক্ষা।
এদিকে আজ শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৬ ওভারে ভারত যখন ৫৩ রান তুলল, তখনই বুঝা গেছে পিচ রিড করতেই ভুল হয়েছে বাংলাদেশের। আক্ষেপের গল্পটা সেখান থেকেই শুরু—৬ ওভারে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কেবল সাকিব আল হাসানের উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৫০তম উইকেট নিয়ে কীর্তি গড়েন তিনি। তবে দলের তেমন কাজে লাগেনি।
নবম ওভারে তানজিম সাকিব জোড়া আঘাত হানেন। ১৩তম ওভারে রিশাদ ফেরান রিশাভ পান্তকে। নিয়মিত উইকেটের পতন হলেও যারাই নেমেছেন চড়াও হয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের ওপর। শেষ ৪ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৬২ রান। আর এতেই ১৯৬ রানের পাহাড় গড়ে কোহলিরা। সর্বোচ্চ অর্ধ্বশতক হাকান হার্দিক পান্ডিয়া।
জবাবে প্রথম ৬ ওভারে বাংলাদেশ করে ৪২ রান। তানজিদ তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেছেন ওয়ানডে মেজাজে। এতে ১০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরশিটে তখন ৬৭ রান! এরপর তানজিদ তামিম, তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসানরা আসা যাওয়ার মিছিলে থাকেন।
শেষ দিকে জাকের আলী অনিকও নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ হন। তবে রিশাদ হোসেন ক্রিজে এসে ঝড় তুললেও হারের ব্যবধানটাই শুধু কমে। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৪ রান করেন তিনি। আর এতেই ১৪৬ রানে থামে বাংলাদেশের রানের চাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত : ১৯৬/৫ (২০)
টার্গেট : ১৯৭ (২০)
বাংলাদেশ : ১৪৬/৮ (২০)
ফলাফল : ৫০ রানে জয়ী ভারত।
গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে একাদশে এক পরিবর্তন নিয়ে স্কোয়াড গড়েছে বাংলাদেশ। পেসার তাসকিন আহমেদকে বসিয়ে একাদশে ফেরানো হয় উইকেট কিপার ব্যাটার জাকের আলিকে। এতে দুই পেসার আর তিন স্পিনার নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ।
অপরদিকে স্কোয়াডে কোনো পরিবর্তন আনেনি টিম ইন্ডিয়া। আগের ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নামে বাংলাদেশকে নাস্তানাবুদ করে রোহিত-কোহলিরা।
বাংলাদেশ একাদশ
তানজিদ হাসান, লিটন দাস (উইকেটকিপার), নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলি, রিশাদ হোসেন, মেহেদী হাসান, তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান।
ভারত একাদশ
রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রিষভ পান্ত, সূর্যকুমার যাদব, শিবম দুবে, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষ প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ, আর্শদীপ সিং।
ক্রিফোস্পোর্টস/২২জুন২৪/এসএ