আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসির এক আত্মীয়ের পরিবারকে গত ২ মার্চ হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। এবার আর্জেন্টাইন উইঙ্গার আনহেল ডি মারিয়া ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়া হলো। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার শেষ রাতে আর্জেন্টিনার শহর রোজারিওতে যেখানে ডি মারিয়ার পরিবার বাস করেন।
তার পরিবার এখনো রোজারিওতে থাকলেও ডি মারিয়া বর্তমানে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সঙ্গে দুইটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন৷ একটি ম্যাচ ইতোমধ্যে খেলা হয়ে গেলেও আরেকটি ম্যাচ এখনো বাকি রয়েছে৷
রোজারিওয় ডি মারিয়ার বাড়ি ফানেস হিলস মিরাফ্লোরেসে গতকাল রাত আড়াইটার দিকে একটি চলন্ত গাড়ি থেকে কালো নাইলনে মোড়ানো হত্যার হুমকির বার্তাসহ একটি বান্ডেল অজ্ঞাত ব্যক্তির দ্বারা ছুঁড়ে মারা হয়েছে। সেখানে লেখা ছিল, ডি মারিয়া যদি রোজারিওয় ফিরে আসে তাহলে তার পরিবারের একজনকে তারা মেরে ফেলবে।
ডি মারিয়া আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন, তিনি অবসরে যাওয়ার আগে কিছু দিন তার ছোটবেলার ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলতে চান। বর্তমানে পর্তুগীজ ক্লাব বেনফিকার এই ফুটবলারের ক্লাবের সঙ্গে আগামী ৩০ জুন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এরপরই তিনি তার ছোটবেলার ক্লাবে খেলতে রোজারিওয় ফিরে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল৷ কিন্তু দুর্বৃত্তরা তাদের বার্তায় এটাই জানিয়েছেন যে, রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলতে আসলে তবেই তারা ডি মারিয়ার পরিবারের কাউকে হত্যা করবে।
ডি মারিয়ার শহর যে রাজ্যের মধ্যে পড়েছে সেই সান্তা ফে’র বিচারক ও পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনাটি নিয়ে আঁট ঘাট বেধে তদন্তে নেমেছে। দেশটির ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস রোজারিও পুলিশের বরাতে জানিয়েছে, ডি মারিয়ার বাড়ির বাইরে চলন্ত গাড়ি থেকে হুমকি বার্তাটি ছুঁড়ে মারার সময় চারটি গান শটের শব্দ শোনা গিয়েছিল। কিন্তু চলন্ত গাড়ি থেকে এলোমেলোভাবে শট করায় এতে কারো ক্ষতি হয়নি।
সেই হুমকি বার্তায় ডি মারিয়ার বাবার উদ্দেশ্যে লেখা ছিল, ‘আপনার ছেলেকে পুনরায় রোজারিওয় আসতে নিষেধ করে দেবেন। তা না হলে আমরা আপনার পরিবারের যে কোন একজনকে মেরে ফেলবো। পুলারো আসলেও আপনাদের বাঁচাতে পারবে না। এটি শুধুমাত্র ছোট কোন কাগজ নয়, এটা হচ্ছে লিড (বক্সিংয়ের ভাষায় প্রতিপক্ষকে পাঞ্চ দিয়ে আঘাত করাকে বেঝায়) এবং মৃত মানুষ।’ এখানে পুলারো হলো সান্তা ফে’র গভর্নর। তার কথাই বোঝানো হয়েছে।
রোজারিও মাদক ব্যবসা ও মাফিয়া সন্ত্রাসবাদের জন্য পৃথিবীব্যাপী কুখ্যাত হিসেবে পরিচিত। রেজারিওয় দেশটির অন্য যে কোন শহরের তুলনায় প্রতি বছরে সহিংসতায় জড়িয়ে মৃত্যুর হার কয়েকগুন বেশি। রেজারিও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কৃষি বন্দর যার আড়ালে এটি মাদক চোরাচালানের অভয়ারণ্যও বটে। এটি এতটাই কুখ্যাত এলাকা যে, সান্তা ফে’র গভর্নর পুলারো নিজেই তার পরিবারকে রোজারিও থেকে অন্য এলাকায় পাঠিয়ে দিয়েছেন।
কিছু দিন আগে আনহেল ডি মারিয়া নিজেও রোজারিওতে তার পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে দুশ্চিন্তার বিষয়টি জানিয়েছিলেন। সাথে নিজের এলাকা নিয়ে আশা-আকাঙ্ক্ষার কথাও জানিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা ফরোয়ার্ড। পুলারো নিজেই রোজারিওর এসব কার্যক্রমকে ‘নারকোটেরোরিজম’ (মাদক সন্ত্রাস) বলে আখ্যা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কাঁদলেন ভিনিসিয়ুস, সংবাদ সম্মেলনে দিলেন কড়া বার্তা
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬মার্চ২৪/এমএস/এমটি