গত বছরের অক্টোবরেই টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশের বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারের অধীনে সবশেষ শিরোপা ঘরে তুলেছিলেন সাবিনারা। তবে এবার সাফ জেতানো কোচের বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ এনে বিদ্রোহে নেমেছেন নারী দলের ফুটবলাররা। এই কোচের অধীনে না আর খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে একত্র হয়ে লিখিত বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন অধিনায়ক সাবিনাসহ বেশ কয়েকজন ফুটবলার। তারা জানান ‘আমরা এই কোচের অধীনে কোনো প্রস্তুতি ক্যাম্প করব না। এই কোচ থাকলে আমরা সম্মান নিয়ে বিদায় নিব।’
এসময় কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘একটা বিষয়ই বলার (আছে), নিজেদের প্রমাণের কিছু নেই। ব্যাপারটা আত্মসম্মানের।’-এটুকু বলে আরো আবেগপ্রবণ হয়ে মাথা নুইয়ে ফেলেন সাবিনা। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই দেশের জন্য খেলি। কোচ বাটলার আমাদের নিয়ে কটূক্তি করছে। দলের মেয়েদের জন্য এটা মেনে নেওয়া অসম্ভব।’
আরও পড়ুন:
» সিলেটকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্লে-অফে চিটাগং
» কোচ-ফুটবলার দ্বন্দ্ব : বাটলার থাকলে গণ অবসরে যাবেন সাবিনারা
সাবিনার পর কোচের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন দলের অন্যান্য ফুটবলাররাও। কৃষ্ণা রাণী সরকার বলেন, ‘আমরা মাঠে খুবই মানসিক চাপে থাকি। বিশেষ করে উনি হচ্ছে আমাদের অঙ্গভঙ্গি নিয়ে কটূক্তি করেছেন। আমাদের খুব সকালে উঠতে হয়, তখন আমরা একটু ক্যাজুয়াল থাকতেই পারি। কিন্তু উনি আমাদের নিয়ে কটূক্তি করেন। যে কারণে আমরা আরো আপসেট হয়ে যাই।’
কোচ বাটলার খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত বিষয়েও হস্তক্ষেপে করেন বলে বলে অভিযোগ এনেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন বড় হয়েছি। আমরা ছুটির দিনে ঘুরতে যেতেই পারি। আমরা কোথায় যাই, কার সঙ্গে কফি খেলাম এসব নিয়েও উনি আমাদের চাপে রাখে।’
নারীদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালে কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে ফুটবলারদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছিল। মূলত পিটার সিনিয়র খেলোয়াড়দের পছন্দ করেন না এমন একটি বিষয় সামনে এসেছিল। যে কারণে সাফে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সিনিয়র ফুটবলারদের ছাড়াই একাদশ সাজান কোচ বাটলার। সে ম্যাচটি হারতে হারতে শেষ পর্যন্ত ড্র করেছিল বাংলাদেশ।
পরেই ম্যাচেই একাদশে পরিবর্তন আনেন বাটলার । সে ম্যাচ থেকে একাদশে সুযোগ পেতে শুরু করেন সিনিয়ররা। শেষ পর্যন্ত ফের শিরোপা জিতেই টুর্নামেন্ট শেষ করেছিল বাঘিনীরা। আর শিরোপা জয়ের আনন্দের এই ইস্যুটি কিছুটা আড়ালে চলে যায়। তবে বেশ ভালোভাবেই দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে এবং এই কোচের অধীনে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফুটবলাররা।
ক্রিফোস্পোর্টস/৩০জানুয়ারি২৫/বিটি