প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই অলিম্পিক এক গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে ক্রমশ এগিয়ে চলছে। গ্রীকদের উদ্ভাবিত ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন এই প্রতিযোগিতায় যুগ যুগ ধরে খেলে গেছেন বহু রথী-মহারথী।
জেসি ওয়েন্স, পাভো নুরমি থেকে শুরু করে এ যুগের মাইকেল ফেলপস কিংবা উসাইন বোল্টদের নাম রয়েছে অলিম্পিকের সোনালী ইতিহাসের পাতায়। যাদের নামের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে অলিম্পিক ইতিহাসের অন্যতম সেরা কিংবদন্তী অ্যাথলেটের তকমা।
অলিম্পিকের ভিন্ন ভিন্ন ইভেন্টের সঙ্গে মিশে আছে স্বতন্ত্র কিংবদন্তিদের নাম। বিদ্যুত গতিতে দৌঁড়ের কথা উঠলেই যেমন চলে আসে উসাইন বোল্টের নাম, তেমনি সাঁতারে সর্বকালের সেরার নাম মাইকেল ফেলপস। ট্রাক এন্ড ফিল্ডে রয়েছেন আরেক কিংবদন্তি জেসে ওয়েন্স। চলুন জেনে নেওয়া যাক অলিম্পিক ইতিহাসের সর্বকালের সেরা পাঁচ কিংবদন্তিদের।
আরও পড়ুন :
» ক্যারিয়ারসেরা র্যাঙ্কিংয়ে রোহিত, অপরিবর্তিত শান্ত-মুশফিকদের অবস্থান
» মরকেলকে বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ করলো বিসিসিআই
» কষ্টের দিনগুলো ভুলে দ্রুত মাঠে ফিরতে চান এবাদত
পাভো নুরমি
জন্ম ফিনল্যান্ডে। ১৯২০ সাল থেকে অলিম্পিকের মিডল ও লং ডিসট্যান্স ইভেন্টে রাজত্ব করার সুবাদে তার নামের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ‘ফ্লায়িং ফিন’ নামক বিশেষ শব্দদ্বয়। গোটা ক্যারিয়ারে ২২টি বিশ্ব রেকর্ডের পাশাপাশি অলম্পিকে তার রয়েছে ১২টি পদক। এর মধ্যে ৯টিই স্বর্ণপদক। টানা ৮০ বছরে সবচেয়ে বেশি পদক জেতা অ্যাথলেট ছিলেন নুরমি। ফলে ১৯৯৬ সালে টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের সেরা অলিম্পিয়ানের মুকুট দেওয়া হয় পাভো নুরমিকে।
জেসে ওয়েন্স
১৯৩৬ সালে নাৎসি জার্মানির বার্লিনে বসে অলিম্পিকের আসর। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বার্লিন অলিম্পিক বয়কটের ডাক দেয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেকে জেসে ওয়েন্স নামক এক আফ্রো-আমেরিকানের নেতৃত্বে ১৭ জনের বহর নিয়ে সেই অলিম্পিকে অংশ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেই আসরে চারটি স্বর্ণপদক জিতে সাড়া ফেলে দেন ওয়েন্স। দেশে ফিরলে তাকে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট বিশেষ সম্মাননা জানান।
উসাইন বোল্ট
বর্তমানে যুগের সেরা অ্যাথলেট কে? উসাইন বোল্ট নাকি মাইকেল ফেলপস? এ নিয়ে অবশ্য বিতর্কের সুযোগ রয়েছে। তবে নিজেদের ইভেন্টে সেরাদের সেরা এই দুই কিংবদন্তী। যা নিয়ে নেই কোনো বিতর্ক। অলিম্পিকের ইতিহাসে টানা তিনটি স্বর্নপদক জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্টের। ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে ১০০ ও ২০০ মিটার এবং ১০০ মিটার রিলেতে স্বর্ণ জিতে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন তিনি। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে তার ৯.৫৮ সেকেন্ডের বিদ্যুৎ গতির রেকর্ড আজও অক্ষুন্ন রয়েছে। সবমিলিয়ে তার ঝুলিতে রয়েছে ৮টি স্বর্ণপদক।
আরও পড়ুন :
» অলিম্পিক গেমস: বিদায় প্যারিস, স্বাগত লস অ্যাঞ্জেলস
» প্যারিস অলিম্পিক: পদক পেলো কতটি দেশ, বাংলাদেশ কী পেলো?
» আক্ষেপ নিয়ে ফুটবলকে বিদায় বললেন ব্রাজিল কিংবদন্তি মার্তা
মাইকেল ফেলপস
জলমানব অথবা জলের রাজা। মাইকেল ফেলপসের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায় এই শব্দগুলো। প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে ২৩ অলিম্পিক পদক নিয়ে পাভো নুরমির ৮০ বছরের রেকর্ড ভাঙেন ফেলপস। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে অবসর নিলেও ২০১৬ অলিম্পিকে অবসর ভেঙে আবারো ফিরে আসেন ফেলপস। এতে জিতে নেন পাঁচটি স্বর্ণপদক। অলিম্পিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পদক জয়ী একমাত্র অ্যাথলেট এখন মাইকেল ফেলপস।
নাদিয়া কোমানেসি
১৯৭৬ সালের মন্ট্রিয়েল অলিম্পিকে নিজেকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দেন রোমানিয়ান জিমন্যাস্ট নাদিয়া কোমানেসি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে নাদিয়া তাক লাগিয়ে দেন পুরো বিশ্বকে। বলা হতো, জিমন্যাস্টদের ১০ পাওয়া অসম্ভব, কিন্তু নাদিয়ার জন্য তা ছিল খুবেই মামুলি। মন্ট্রিয়েল অলিম্পিকে ১০ পেয়ে যান তিনি, শুধু তাই নয় এরপর আরো সাতবার দশে দশ পেয়েছিলেন নাদিয়া। ক্যারিয়ারে তার ঝুলিতে রয়েছে ৯টি পদক। এর মধ্যে পাঁচটি স্বর্ণপদক, তিনটি রোপ্য ও একটি ব্রোঞ্জ পদক রয়েছে।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৪আগস্ট২৪/টিএইচ/এসএ