টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত সুপার এইটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু সুপার এইটে ব্যাটারদের ব্যর্থতার দরুণ শতভাগ হারে বিদায় নিতে হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। সেই রেশ পুরোপুরি কাটতে না কাটতেই পেসার তাসকিনের ইস্যু নিয়ে আগুনে ঘি ঢালবার জোগাড় হয়েছিল। বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ককে নিয়ে অভিযোগ ওঠে, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের দিন ঘুমের কারণে টিম বাস মিস করেন তাসকিন। তাই একাদশে রাখা হয়নি তাকে। এবার তাসকিন নিজেই বিষয়টি খোলাসা করলেন।
বিশ্বকাপে কোহলিদের বিপক্ষে ম্যাচের দিন ঘুমের কারণে দলের টিম বাস মিস করেন টাইগার পেসার। গতকাল (সোমবার) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তা ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই কর্তা জানান, তাসকিনের টিম বাস মিসের কারণ সময়মত ঘুম থেকে উঠতে না পারা।
ওই বিসিবি কর্তা বলেন, ‘তাসকিন ওই দিন টিম বাস মিস করলেও পরে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি কেন একাদশে ছিলেন না সেটা কোচই ভালো বলতে পারবেন। ভারতের বিপক্ষে একাদশে কোচের পরিকল্পনায় তাসকিন ছিলেন কি না সেটা শুধুমাত্র কোচই জানেন। তাদের মধ্যে সমস্যা হলে তো আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই তাকে একাদশে রাখতেন না কোচ। তাসকিন তার এই ইস্যুর কারণে পরে সতীর্থ ও সবার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। তাই মনে হয় না, এটা নিয়ে আর কোন সমস্যা তৈরির দরকার আছে।’
আরো পড়ুন : প্যারিস অলিম্পিকের টিকিট পেলেন আরও দুই বাংলাদেশি
তবে তাসকিনের ভারতের বিপক্ষে একাদশে না থাকার কারণ যে টিম বাস মিস করা সেটি নিশ্চিত করলেন তিনি নিজেই। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ খেলতে টাইগার পেসার এখন অবস্থান করছেন শ্রীলঙ্কায়। সেখান থেকেই দেশের এক সংবাদমাধ্যমকে তাসকিন জানান, ‘সেদিন হোটেল থেকে টিম বাস ছাড়ার সময় ছিল সাড়ে আটটা। কিন্তু বাস ছাড়ে ৮ টা ৩৫ মিনিটে। কিন্তু আমার একটু দেরি হয়ে যাওয়ায় গাড়িতে করে ৮ টা ৪৩ মিনিটে আমি মাঠের উদ্দেশ্য রওনা হই। মানে বাসের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই গিয়েছি। কিন্তু দেরিতে মাঠে যাওয়ায় আমাকে ম্যাচে খেলায়নি বলে যে কথা ছড়িয়েছে সেটা সত্যি নয়। আমাকে এমনিই খেলায়নি।’
টাইগার পেসার আর বলেন, ‘অনেকেই দেখলাম বলছে আমি নাকি টসের পর মাঠে গেছি, এটাও মিথ্যা কথা। টস হওয়ার ৩০-৪০ মিনিট আগে আমি ভেন্যুতে পৌঁছেছি। আমাকে বাদ দিলে তো আমার জায়গায় শরিফুলকেই নিতে পারতো। আমাকে রাখেনি হয়তো দলীয় সমন্বয়ের কারণে।’
এই প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে তিন ম্যাচে জয় পেল টাইগাররা। কিন্তু ব্যাট হাতে টাইগারদের দৈন্যদশার কারণে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে তাদের। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়ে শুভ সূচনা করলেও পরের ম্যাচে প্রোটিয়াদের কাছে ৪ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। পরে নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়ে সুপার এইটের টিকিট কাটে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। গ্রুপ পর্বে টাইগারদের খেলা ম্যাচগুলোর উইকেট ছিল বেশ মন্থর যা অনেকটাই মিরপুরের মত। কিন্তু দলের ব্যাটাররা বরাবরের মতই হতাশ করেছেন ভক্তদের।
শেষ আটের তিন ম্যাচের প্রথম দু’টিতে শক্তিশালী ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেলেও আফগানিস্তানকে হারিয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। আফগানদের প্রথম ইনিংসে ১১৫ রানে আটকেও ফেলে তারা। শেষ চার নিশ্চিত করতে টাইগারদের তখন প্রয়োজন ১২.১ ওভারের মধ্যে জয় তুলে নেওয়া। কিন্তু সেই লক্ষ্যে না ছুটে কোন মতে জয়ের জন্য খেলতে থাকে সাকিব-মাহমুদুল্লাহরা। কিন্তু শেষ অবধি বৃষ্টি আইনে ৮ রানে হেরে গিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
ক্রিফোস্পোর্টস/০২জুলাই২৪/এমএস