সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর সেনাবাহিনীর সহায়তায় গঠিত হয় বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে এর মাঝে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, লুটপাট ও সহিংসতার মতো ঘটনা ঘটে। এ সময় ছড়ায় সংখ্যালঘু সনাতনীদের ওপর নির্যাতনের বিভিন্ন তথ্য।
ভারতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে মূল ধারার গণমাধ্যমেও উঠে আসে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের উপর নৃশংসভাবে হামলার একাধিক সংবাদ। যদিও পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেক করে দেখা যায়, সে সকল ঘটনার অধিকাংশই গুজব বা মিথ্যা। দেশেও একটা গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি করতে চেয়েছিল সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে এখনো ভারতে বিদ্যমান রয়েছে বাংলাদেশের প্রতি একটা বিদ্বেষী মনোভাব। যা প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে সরাসরি হামলার হুমকির মাধ্যমে। আগামী অক্টোবরে গোয়ালিয়রে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বাতিলের দাবি জানিয়েছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে হামলার হুমকির ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ফ্রি প্রেস জার্নাল। সংবাদ মাধ্যমটি নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে এই সম্পর্কিত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সভাপতি ডাঃ জয়বীর ভরদ্বাজ অবিলম্বে আগামী ৬ অক্টোবর ভারতে হতে যাওয়া দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ গোয়ালিয়র থেকে বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচ বাতিল না হলে বিরোধীতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর গণহত্যা করা হচ্ছে, হিন্দুদের মন্দির ধ্বংস করা হচ্ছে। এরপরেও প্রধানমন্ত্রী মোদি এখানে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই, হিন্দু মহাসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গোয়ালিয়রে এই ক্রিকেট ম্যাচের বিরোধিতা করা হবে। শান্তি বজায় রাখার জন্য ম্যাচটি বাতিল করা উচিত। নাহলে দেশে অশান্তি হবে।’
যদিও প্রথমে টি-টোয়েন্টি সিরিজের এই ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়। তবে স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজ চলমান থাকায় ভেন্যু পরিবর্তন করে আনা হয়েছে গোয়ালিয়রে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পর অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ। যার প্রথম ম্যাচ আয়োজন নিয়েই দেখা দিল অনিশ্চয়তা। যদিও এ বিষয়ে এখনও কিছু বলেনি দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।
আরও পড়ুন: বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া লিগ আয়োজনসহ ফুটবলারদের ৭ দফা দাবি
ক্রিফোস্পোর্টস/১৭আগস্ট২৪/এফএএস