ক্রীড়া ক্ষেত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর অলিম্পিক৷ অনেকেই ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের চেয়েও এগিয়ে রাখেন অলিম্পিককে৷ তাই বিভিন্ন দেশের অ্যাথলেটদের কাছে অলিম্পিক এক স্বপ্নের নাম।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই অলিম্পিক এক গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে ক্রমশ এগিয়ে চলছে৷ চলতি প্যারিস অলিম্পিকেও চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই৷
প্যারিসের সিন নদীতে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠেছে ৩৩তম অলিম্পিক গেমসের। এবারের আসরে ৩২টি খেলার জন্য রয়েছে ৩২৯ ইভেন্ট। পদক জয়ের লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে ২০৬টি দেশের ১০ হাজার ৭১৪ জন অ্যাথলেট।
এখন পর্যন্ত ১২টি স্বর্ণপদকসহ পদক জয়ের তালিকায় শীর্ষ রয়েছে চীন৷ স্বর্ণপদকে পিছিয়ে থাকলেও সর্বোচ্চ পদক রয়েছে মার্কিন অ্যাথলেটদের ঝুলিতে৷
আরও পড়ুন:
» টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উগান্ডার উত্থান
» এনগোলা কান্তে : আবর্জনার পর্বত থেকে স্বপ্ন ছোঁয়ার গল্প
অলিম্পিকের শুরুটা হয়েছিল ৭৭৬ খ্রিষ্টপূর্বে। প্রাচীন গ্রীসের নগর রাষ্ট্রের মধ্যে মর্যাদার লড়াই হিসেবে বিভিন্ন খেলা অনুষ্ঠিত হতো, যা তাদের দেবতা জিউসের সম্মানে প্রদর্শন করা হতো। এভাবে একসময় খেলাগুলো ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হতে শুরু করে৷
এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি গঠিত হয়৷ এই কমিটির হাতেই সৃষ্টি হয় অলিম্পিকের নানা নিয়মকানুন। অলিম্পিক কমিটি প্রতিষ্ঠার মাত্র চার বছর পর ১৮৯৬ সালে এথেন্সে আয়োজিত হয় প্রথম আধুনিক অলিম্পিক৷
এথেন্স অলিম্পিকে অংশ নেয় বিশ্বের ১৪টি দেশের ২৪১জন অ্যাথলেট ও ৬০ হাজার দর্শক। ওই আসরে সাইকেলিং, ওয়েটলিফটিং, রেসলিং, টেনিস, সুইমিংসহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় খেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ এরপর থেকে প্রতি চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হয় ক্রীড়া ক্ষেত্রের সবচেয়ে এই জনপ্রিয় আসর৷
১৮৯৬ সালে আধুনিক অলিম্পিকের জনক পিয়ের ডি কুবার্টিন অলিম্পিকের জন্য তিন শব্দের মূলমন্ত্র তৈরি করেন। ‘সিটিয়াস,অলটিয়াস,ফরটিয়াস। ‘এই তিন ল্যাটিন শব্দের ইংরেজি হলো- ফাস্টার,হায়ার,স্ট্রংগার।
আরও পড়ুন:
» সুব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুললেন দ্রাবিড়, বোনাসের অতিরিক্ত অর্থ নিতে নারাজ
» আর্জেন্টিনার সাদা-নীল আকাশের নক্ষত্রের পতন
অলিম্পিকের মূলমন্ত্র ঠিক করা গেলেও, তখন অলিম্পিকের লোগো নিয়ে কাজ শুরু হয়নি৷ ১৯১২ সালে কুবার্টিন ভিন্ন ভিন্ন রঙের পাঁচটি রিং নিয়ে একটি নকশা তৈরি করেন৷ যা পরবর্তীতে অলিম্পিকের ঐতিহাসিক প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়৷
নীল, কালো, লাল, হলুদ ও সবুজ রঙের এই পাঁচটি রিং নির্দেশ করে পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশকে। কুবার্টিন এর ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, গোটা পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যাদের জাতীয় পতাকায় এই পাঁচটি রঙের অন্তত কোনও একটি রং নেই।
কুবার্টিনের চোখে এই লোগো পুরো দুনিয়ার মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করতে যথেষ্ট৷ রিংয়ে থাকা প্রত্যেকটি রঙের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি৷ নীল রং দিয়ে ইউরোপ মহাদেশ, হলুদ রঙে এশিয়া, কালো রঙে আফ্রিকা, লাল রঙে ওশিয়ানিয়া এবং সবুজ রঙে আমেরিকা মহাদেশের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে লোগোতে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশকে আলাদা করে দেখানো হয়নি৷
১৯২০ সালে বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প অলিম্পিকে প্রথম ব্যবহৃত হয় এই অলিম্পিক রিং। এরপর প্রতিটি আসরেই দেখা মিলে রিংটি। যা বর্তমানে জড়িয়ে গেছে অলিম্পিকের বনেদি ইতিহাসের সঙ্গে।
ক্রিফোস্পোর্টস/৩আগস্ট২৪/টিএইচ/বিটি