আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট কিংবা লঙ্গার ভার্সনের ঘরোয়া ম্যাচগুলো সাধারণত লাল বলেই খেলা হয়ে থাকে। আর এই ম্যাচগুলো খেলা হয় দিনের আলোতে। তবে সাদা পোশাকে দিবা-রাত্রি টেস্টের জন্য চালু করা হয়েছে গোলাপি বল।
চলছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির লড়াই। পার্থে প্রথম টেস্টটি দিনের আলোতে লাল বলে খেললেও, দ্বিতীয় টেস্ট হচ্ছে দিবা-রাত্রির। তাই অ্যাডিলেডে গোলাপি বলে খেলছে দুই দল। আর এ কারণেই বেশ আলোচনায় রয়েছে গোলাপি বল।
অনেক আগে থেকেই গোলাপি বলে খেলা হয়ে থাকলেও ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টেস্টে প্রথমবারের মতো খেলা হয় গোলাপি বলে। অ্যাডিলেডে সেই ম্যাচটি মাত্র তিন দিনেই সমাপ্ত হয়েছিল। অল্প রানের রোমাঞ্চকর সেই ম্যাচে কিউইদের ৩ উইকেটে হারিয়েছিল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন:
» সিরাজের ‘১৮১.৬ কিলোমিটার’ গতির বল, আসলে কি ঘটেছিল?
» বোর্ডের নতুন সিদ্ধান্তে অখুশি ইংলিশ ক্রিকেটাররা
গোলাপি বলের টেস্টগুলো সাধারণত লো-স্কোরিং হয়ে থাকে। কারণ গোলাপি বলে ব্যাটারদের চেয়ে বোলাররা বেশি সুবিধা পান। এ কারণেই টেস্টের নির্ধারিত পাঁচ দিনের বেশ আগেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু কেন গোলাপি বলে ব্যাটারদের চেয়ে বোলাররা বেশি সুবিধা পান। লাল ও গোলাপি বলের মধ্যে পার্থক্য কী?
লাল ও গোলাপি বলের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো এর উপরিভাগের আবরণে। লাল বলের তুলনায় গোলাপি বলের স্তর বেশি মোটা। গোলাপি বলে বিশেষ ধাতুর স্তর বা ‘ল্যাকার’ দেওয়া হয়। আর এর উপরিভাগটা খুবই যত্ন সহকারে পালিশ করা হয়। এতে বলের শাইন খুব ভালো হয়। যার কারণে সহজেই এটি পুরোনো হয় না, টেকেও বেশি সময়।
গোলাপি বলের এসব বিশেষত্বের কারণে বলে সুইং বেশি হয়। তাছাড়া এর স্থায়িত্ব বেশি হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ বল করলেও নতুনের মতোই আচরণ করে। আর কারণেই ব্যাটারদের চেয়ে বোলাররা বেশি সুবিধা পেয়ে থাকেন।
অন্যদিকে লাল বলের চামড়া গোলাপি বলের মতো মোটা নয়। এর উপরের বার্ণিশের প্রলেপও ক্ষণস্থায়ী। যার ফলে দিনের আলোতে দীর্ঘক্ষণ বল করলে এটি ধীরে ধীরে শাইন হারায়। ফলে নতুন বলে বোলাররা যতটা সুবিধা পান, পুরোনো বলে ততটা পান না।
গোলাপি বলে সাধারণত অস্ট্রেলিয়াই বেশি খেলে থাকেন। এজন্য দিবা-রাত্রী টেস্টে তারা বেশ শক্তিশালী। আর গোলাপি টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিও অজি পেসার মিচেল স্টার্ক। ১৩ টেস্টে ৭২ উইকেট শিকার করেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম গতিময় এই বোলার।
প্রসঙ্গত, উপমহাদেশের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। ২০১৯ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে গোলাপি বলে খেলেছিল দুই দল। তবে স্বাগতিকদের কাছে ইনিংস ও ৪৬ রানের ব্যবধানে ম্যাচটি হেরেছিল টাইগাররা।
ক্রিফোস্পোর্টস/৭ডিসেম্বর২৪/বিটি