বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা করে নিয়েছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। এ অর্জনে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্ত-সমর্থকরা৷ আইসিসির বার্ষিক পর্যবেক্ষণ ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আম্পায়ারদের শীর্ষ স্তরে তথা এলিট প্যানেলে এ সুযোগ পেয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী শরফুদ্দৌলা।
২০১০ সালে মিরপুরে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একদিনের ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক হয় শরফুদ্দৌলার। এখন পর্যন্ত পুরুষদের ১০টি টেস্ট, ৬৩টি ওয়ানডে ও ৪৪টি টি-টোয়েন্টিতে অন-ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়া মেয়েদের ১৩টি ওয়ানডে ও ২৮টি টি-টোয়েন্টিতেও দায়িত্ব পালন করেছেন শরফুদ্দৌলা।
এ ঘটনায় ভক্তদের অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, আইসিসির এলিট প্যানেল কী?কেনই বা এই প্যানেলকে আইসিসির আম্পায়ারিংয়ের শীর্ষ স্তর বলা হয়?
একটি ক্রিকেট ম্যাচকে সুষ্ঠু ও নির্ভুলভাবে পরিচালনার সম্পূর্ণ ভার থাকে আম্পায়ারদের উপর৷ মাঝে মাঝে তাঁদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে ম্যাচের ফলাফল। ক্রিকেট ম্যাচ সঠিকভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ২০০২ সালে বিশ্বের সেরা আটজন আম্পায়ারদের নিয়ে এলিট প্যানেল গঠন করে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইসিসি)।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত টেস্ট এবং ওয়ানডে ম্যাচ পরিচালনার জন্য আইসিসি এই আম্পায়ারদের মধ্যে থেকে যে কাউকে নিযুক্ত করে থাকেন এবং আইসিসির বিভিন্ন বৈশ্বিক টুর্নামেন্টগুলোতে তাঁরা ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে শরফুদ্দৌলাকে নিয়ে এলিট প্যানেলের আম্পায়ারের সংখ্যা এখন ১২ জন।
শরফুদ্দৌলার এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়ার পর আইসিসির ম্যাচ রেফারিদের এলিট প্যানেল থেকে বাদ পড়েছেন ক্রিস ব্রড। ২০০৩ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসা ব্রড এখন পর্যন্ত টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৬১৯টি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন৷
প্রতি বছর আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ারেরা ১০টি টেস্ট এবং ১৫টির মতো ওয়ানডে ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ পান। আইসিসির আম্পায়ার্স সিলেকশন প্যানেল প্রতিবছর এলিট প্যানেলের আম্পায়ারদের পারফর্ম্যান্স পর্যালোচনা করে থাকে এবং একইসাথে আন্তর্জাতিক আম্পায়ারদের পারফর্ম্যান্স বিবেচনা করে তাদেরকে এলিট প্যানেলে যুক্ত করা হয়।
এলিট প্যানেল থেকে আম্পায়ারিং করার সুবাদে আইসিসি থেকে প্রতি বছর ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার মার্কিন ডলার সম্মানী পেয়ে থাকেন তারা। আইসিসির পক্ষ থেকে বিমানের বিজনেস ক্লাসে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ, উন্নতমানের হোটেলে থাকার সুবিধা এবং ম্যাচ ফি-সহ দারুণ সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
এখন পর্যন্ত যারা আছেন আইসিসি এলিট প্যানেল: কুমার ধর্মসেনা (শ্রীলঙ্কা), ক্রিস্টোফার গ্যাফানি (নিউ জিল্যান্ড), পল রাইফেল (অস্ট্রেলিয়া), রডনি টাকার (অস্ট্রেলিয়া), মাইকেল গফ (ইংল্যান্ড), আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক (দক্ষিণ আফ্রিকা), রিচার্ড কেটেলবরো (ইংল্যান্ড),রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ (ইংল্যান্ড), নিতিন মেনন (ভারত), আহসান রাজা (পাকিস্তান), শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ (বাংলাদেশ) ও জোয়েল উইলসন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।
আরও পড়ুন: নারী ও পুরুষদের টেস্ট ক্রিকেটে কি কি পার্থক্য রয়েছে?
ক্রিফোস্পোর্টস/২৯মার্চ২৪/টিএইচ/এমটি