ফুটবলে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার হলো ব্যালন ডি’অর। এই ট্রফি পাওয়া যে কোনো ক্রীড়াবিদের জন্যই অত্যন্ত মর্যাদার। গত দেড় যুগ ধরে এ ট্রফি নিজেদের করে রেখেছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এর মাঝে লুকা মদ্রিচ ও করিম বেনজামা ছাড়া আর কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। এবার ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে দেওয়া হবে ৬৭তম ব্যালন ডি’অর।
এদিকে মৌসুমের আরো ৬ মাস বাকি থাকলেও বিশ্বকাপ শেষে এখনই আলোচনায় চলে এসেছে ব্যালন ডি’অর।
২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ফিফা ও ফ্রান্স ফুটবল যৌথভাবে এ ট্রফিটি দিয়ে আসছিল পরে ২০১৬ সাল থেকে এ পরস্কার এককভাবে দিচ্ছে ফ্রান্স ফুটবল। ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর সম্পাদক গ্যাব্রিয়েল হান্তের আইডিয়া ছিল ব্যালন ডি’অর।
অপরদিকে চলতি বছরের মার্চে ফ্রান্স ফুটবল এক ঘোষণায় ২০২২ মৌসুমে ব্যালন ডি’অরে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। যেখানে ক্যালেন্ডার বছরের পরিবর্তে একটি ফুটবল মৌসুম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের পরিবর্তে জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত সময়কে ব্যালন ডি’অরের জন্য বিবেচনা করা হয়।
এবারের ডি’অরের দৌড়ে কারা এগিয়ে আছেন তা নিয়ে ২০ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে জনপ্রিয় ফুটবল বিষয়ক অনলাইন গোলডটকম। যেখানে দেখা যায় এমবাপ্পের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে আছেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি। আসুন দেখে নেই গোলডটকমের দৃষ্টিতে তালিকায় শীর্ষ পাঁচে কারা আছেন;
লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা/পিএসজি):
২০২১ সালে বার্সেলোনা থেকে ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে যোগ দেন মেসি। পিএসজিতে প্রথম মৌসুমটা যাচ্ছে তাই ছিল আর্জেন্টাইন সুপার স্টারের। এর ফলে দর্শকদের দুয়োধ্বনিও শুনতে হয় তাকে। এমনটা তিনি বার্সেলোনা ক্যারিয়ারের কখনো দেখেননি। তবে বিশ্বকাপের আগে পিএসজির দ্বিতীয় মৌসুমটা শুরু করেন দুর্দান্তভাবে।
২০২২-২৩ মৌসুমে মেসি এ পর্যন্ত ২৪টি গোল ও ১৮টি অ্যাসিস্ট করেন। তার ব্যালন ডি’অর জয়ে যে বিষয়টি এগিয়ে রেখেছে সেটি হলো ফুটবল বিশ্বকাপ। পুরো আসরে ৭টি ম্যাচে করেছেন ৭ গোল সেই সঙ্গে করিয়েছেন ৩টি গোল। আর ফাইনালসহ ম্যাচ সেরা হয়েছেন ৫টি ম্যাচে। যা তাকে অষ্টম ব্যালন ডি’অরের জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে রাখল। যদিও এখনো মৌসুমের আরও ৬ মাস বাকি আছে।
কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স/পিএসজি):
ফরাসি ক্লাবে চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত খেলেছেন এমবাপ্পে। ২০২২-২৩ মৌসুমে এমবাপ্পে এ পর্যন্ত ২৮ গোল ও ৭টি অ্যাসিস্ট করেন। প্রথম ব্যালন ডি’অর জয়ে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি এখন ক্লাব সতীর্থ মেসি। এবারের ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল খেললেও শিরোপা ঘরে তুলতে পারেননি তিনি। তবে ফাইনালে হ্যাটট্রিকসহ পুরো টুর্নামেন্টে ৮টি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে ২ গোল করান। পুরো আসরে ৭ ম্যাচ থেকে করেন ৮টি গোল সেই সঙ্গে করিয়েছেন ২ গোল। আর ম্যাচ সেরা হয়েছেন ৪টিতে।
আরলিং হাল্যান্ড (নরওয়ে/ম্যানসিটি):
ক্লাব ফুটবলে দুর্দান্ত খেলছেন নরওয়ের ফুটবলার আরলিং হালান্ড। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ম্যানসিটিতে এসে একের পর এক রেকর্ড গড়চ্ছেন তিনি। এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ২৪টি গোল করার পাশাপাশি করেন ৩ অ্যাসিস্ট। বিশ্বকাপ মঞ্চে তার দেশ নরওয়ে এবার সুযোগ পায়নি।
এদিকে এ মৌসুমে তিনি যেভাবে গোল করে যাচ্ছেন এতে মৌসুম শেষে তিনি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন তা নিয়েও ভাবতে হবে। এমন খেলতে থাকলে চ্যাম্পিয়ন্স এবং লিগের শিরোপা ঘরে তুলতে পারলে বিশ্বকাপে অংশ না নিয়েও ব্যালন ডি’অর জিততে পারেন তিনি।
নেইমার জুনিয়র (ব্রাজিল/পিএসজি):
কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে হেক্সা জয়ের স্বপ্নভঙ হয়েছে ব্রাজিলের তারকা নেইমারের। তবে বিশ্বকাপের আগে থেকে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন তিনি। আসরে কোয়ার্টারে তিনি দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। কিন্তু শেষ দিকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরায় ক্রোয়াটরা। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গিয়ে হৃদয় ভাঙে নেইমারদের।
এ মৌসুমে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবল মিলে নেইমার ১৮ গোল ও ১৫ অ্যাসিস্ট করেন। বিশ্বকাপের আগের ফর্মে যদি নেইমার ফিরতে পারেন তাহলে ব্যালন ডি’অর জয়ের রেসে তিনিও এগিয়ে থাকবেন।
রবার্ট লেভানদোভস্কি (বার্সেলোনা/পোল্যান্ড):
বিশ্বকাপের এবারের আসরে শেষ ষোলোতে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় লেভানদোভস্কির দেশ পোল্যান্ডকে। বিশ্বকাপে চার ম্যাচ খেলে করেন মাত্র দুটি গোল। চলতি মৌসুমেই বায়ার্ন মিউনিখ থেকে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় যোগ দেন লেভানদোভস্কি।
আরও পড়ুন: প্লেয়ার্স বায়োগ্রাফি: মাশরাফি বিন মর্তুজা
এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত তিনি ২০টি গোল ও ৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন। তার ক্লাব বার্সেলোনা এবারের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে পড়েছে। সেই সঙ্গে তারা ইউরোপা লিগ থেকেও ছিটকে গেছে। তাই লেভার যা করার করতে হবে লা লিগাতেই।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৩ডিসেম্বর২২/এসএ