আজ ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তবে এর আগে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে উঠে এসেছে বড় খবর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। একই সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটেও থামতে চান আগামী মাসে মিরপুরে হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে।
সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পোস্টার বয়। তার বিদায়ের ঘোষণা বিশ্ব মিডিয়ায় সাড়া ফেলেছে। দেশের ক্রিকেটের এমন একজন কিংবদন্তি যখন নির্দিষ্ট কোন ম্যাচ দিয়ে নিজের অবসর নিতে চান, তখন সেটা পূরণ হবে তাই অনুমেয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তেমনটা কি সম্ভব?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ রাখলে দেখা যাবে সাকিব ইস্যুতে বিভক্ত ক্রিকেটপ্রেমীরা। সাকিব ভক্তরা যেমন তার বিদায়ের ঘোষণায় হয়েছেন আবেগ তাড়িত। তেমনই তার প্রতি রাগ ও ক্ষোভ থেকে এই ইস্যু নিয়ে অনেকে করছেন ঠাট্টা-মশকরা। যারা নিয়মিত ক্রিকেট ফলো করেন না, তারাও এই বিষয়ে দিচ্ছেন মতামত।
তবে সাকিব আল হাসান নিজেও জানেন বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি সেখানে তার খেলতে আসা সম্পূর্ণ নিরাপদ হবে না। আর তাই তিনি অবসরের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি বিসিবির কাছে নিজের নিরাপত্তাও প্রত্যাশা করেছেন। মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দিয়ে নিজের লাল বলে ক্রিকেট অধ্যায়ের সমাপ্তি টানতে চান সাকিব।
সাকিব বলেন, ‘বোর্ডকে আমার প্ল্যান জানিয়েছি। বিশেষ করে আমার টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে। যদি সুযোগ থাকে, আমি দেশে গিয়ে খেলতে পারি, মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। তারা (বোর্ড) চেষ্টা করছে এটাকে কিভাবে সুন্দর ভাবে অ্যারেঞ্জ করা যায়, যাতে আমি দেশে গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ ফিল করি।’
তবে সাকিবের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে এদিন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি তো আসলে কোনো এজেন্সি না। এটা বিসিবির হাতে নেই। সরকারের কাছ থেকে আসতে হবে নিরাপত্তা। দুই ধরনের নিরাপত্তা আছে। একটা মামলার, আরেকটা হচ্ছে সমর্থকদের।’
সাকিবের প্রতি ব্যাপক ক্ষোভ ও অভিমানের জন্ম হয়েছে মূলত সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তার ভূমিকা নিয়ে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ এক মাসের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এর আগে এই আন্দোলনে নিহত হয়েছেন অসংখ্য নিরীহ মানুষ।
যে আন্দোলনে গোটা দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এক হয়ে সমর্থন জানিয়েছে, সে সময় নিরব ছিলেন এই তারকা ক্রিকেটার। তবে নিরবতার মাঝেও একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নিজের অবস্থান ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে আরও শোচনীয় করে তুলেছেন তিনি। এমনকি সাকিব ছিলেন পূর্ববর্তী সরকারের একজন সংসদ সদস্য।
আর এই সকল কারণে সাকিব আল হাসান নিজেও জানেন বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আসা তার জন্য শতভাগ নিরাপদ হবে না। তাই তিনি খেলতে আসার প্রত্যাশা করলেও নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি আগেই সামনে নিয়ে এসেছেন। তবে সাকিব আল হাসানের জন্য বিশেষ কোনো নিরাপত্তা অবস্থা থাকবে কিনা সেটা নির্ধারণ করবে সরকার কর্তৃপক্ষ।
তবে এখন পর্যন্ত বর্তমান সরকারের কোন অবস্থান জানা যায়নি। তাই শেষ পর্যন্ত মিরপুরে এসে নিরাপদে খেলতে পারবেন কিনা সাকিব তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। যদি শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসান দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে না পারেন, তবে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে আজকের এই টেস্ট হয়ে যেতে পারে সাকিবের শেষ লাল বলের খেলা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ‘সুখবর’ দিলেন বিরাট কোহলি
ক্রিফোস্পোর্টস/২৭সেপ্টেম্বর২৪/এফএএস