বিশ্বকাপের বছর শেষ হয়েছে। ভারতের নীল সমুদ্র থেকে শিরোপায় আবার হলুদ ছোঁয়া বসিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছিল পুরো ভারতবাসী। তবে বছরের শেষে একটু হাসি ফুটতেই পারে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মুখে। কেননা ক্রিকেটের বাইবেল খ্যাত ‘উইজডেন’ যে বর্ষসেরা দল প্রকাশ করেছে, সেখানে ভারতীয়দের আধিপত্য দেখা দিয়েছে।
বিদায়ী বছরে ৬ সিরিজের ৫টি জয় করেছে রোহিত শর্মারা। ঘরে তুলেছে এশিয়া কাপ শিরোপা। বিশ্বকাপে ফাইনালের আগ পর্যন্ত টানা দশটি ম্যাচ জিতেছে। শুধু ফাইনালটাই হেরেছিল কোহলিরা। ওই হারের বিষাদ এখনো ভোলেনি ভারতবাসী। উইজডেন বিদায়ী ২০২৩ সালের পারফর্মাদের নিয়ে যে একাদশ বানিয়েছে সেখানে ঠাঁই পেয়েছেন ৭জন ভারতীয় ক্রিকেটার।
২০২৩ সাল ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটের রেকর্ডের বছর। মোট ২২টি দল ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে ২১৮টি। যা সংখ্যার হিসেবে এক বছরে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে। সবগুলো ম্যাচের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে উইজডেন প্রকাশ করেছে একাদশ।
যেখানে ভারতের বাইরে দুজন জায়গা পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়া থেকে। আর একজন করে জায়গা পেয়েছেন নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। দলের অধিনায়ক হিসেবে আছেন রোহিত শর্মা। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে এক ক্রিকেটারও ঠাঁই পাননি ওই তালিকায়।
চলুন দেখে নিই উইজডেনের ২০২৩ এর বর্ষসেরা একাদশ
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক) ভারত। ম্যাচ খেলেছে ২৭টি। ৫২.২৯ গড়ে রান করেছেন ১২৫৫।
ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া) ১৩টি ম্যাচে রান করেছেন ৫৭০। গড় ছিল ৫১.৮১। বিশ্বকাপের মাঝপথে এসে সেমিফাইনাল এবং ফাইনালেও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন হেড।
বিরাট কোহলি (ভারত)। রোহিতের মতো কোহলিও ২৭টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ১৩৭৭।বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কোহলির পুরো বছরের গড় ছিল ৭২.৪৭। শচীনের রেকর্ড ভেঙে হয়েছেন ৫০টি সেঞ্চুরির মালিক।
ড্যারিল মিচেল (নিউজিল্যান্ড)। একমাত্র কিউই ক্রিকেটার হিসেবে আছেন একাদশে। ২৬ ম্যাচে ৫২ গড়ে রান করেছে ১২০৪। বল হাতে শিকার করেছেন ৫টি উইকেটও।
হেনরিক ক্লাসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)। উইকেটরক্ষক হিসাবে একাদশে রয়েছে একমাত্র প্রোটিয়া ক্রিকেটার ক্লাসেন। ২৪ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৪৬.৩৫ গড়ে রান করেছেন ৯২৭। উইকেটের পেছনে থেকেও দলকে দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান। তাই সুযোগ মিলেছে উইজডেনের একাদশে।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (অস্ট্রেলিয়া)। বিশ্বকাপে দুটি অতিমানবীয় ম্যাচ খেলা ম্যাক্সওয়েলকে বছরের সেরা একাদশে রাখবেন যে কেউই। তাই ভুল করেনি উইজডেনও। ১১টি ম্যাচে মাঠে নেমে ম্যাক্সওয়েল ৫১.৬২ গড়ে ৪১৩ রান তুলেছেন। বিশ্বকাপে দ্রুততম শতকের রেকর্ডও গড়েছেন ম্যাক্সি।
রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত)। অলরাউন্ডার হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন। ২৬ ম্যাচে বল হাতে ৩১টি উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে রান করেছেন ৩০৯।
মোহাম্মদ শামি (ভারত)। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম একাদশে না থাকলেও হার্দিক পান্ডিয়া ইনজুরিতে পড়ায় দলে এসেই শামি নেন ৫ উইকেট। সেমিফাইনালে ৭ উইকেটসহ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২৪ উইকেট নেন শামি। বছরে ১৯ ম্যাচে ৪৩ উইকেট।
জাসপ্রিত বুমরা (ভারত)। ইনজুরির সাথে লড়াই করেও বছরে ১৭টি ম্যাচে শিকার করেছেন ২৮টি উইকেট। ইকোনমিও ছিল দেখার মতো ৪.৪০।
কুলদীপ যাদব (ভারত)। চায়নাম্যান খ্যাত কুলদীপ বছরজুড়ে ছিলেন ভারতের ভরসা হয়ে। ৩০ ম্যাচে একাদশে ছিলেন তিনি। ৪.৬১ ইকোনমি রান খরচায় উইকেট নিয়েছেন ৪৯টি।
মোহাম্মদ সিরাজ (ভারত)। এশিয়া কাপের ফাইনালে ৬ উইকেট নেয়া সিরাজ বিশ্বকাপেও ভালো করেছেন। পুরো বছরে ২৫ ম্যাচ খেলে শিকার করেছেন ৪৪টি উইকেট। ইকোনমিও ছিল দেখার মতো ৫.২৮।
উইজডেনের বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), ট্রাভিস হেড, বিরাট কোহলি, ড্যারিল মিচেল, আইনরিখ ক্লাসেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রীত বুমরা, কুলদীপ যাদব ও মোহাম্মদ সিরাজ।